নিয়াজুল হক
কান্না
মেয়েটা কাঁদছে
ছেলেটা জল মুছিয়ে দিচ্ছে
এটাই তো চেয়েছি
তার জন্যেই কুয়ো কাটি
আর
গেলাসের মতো উলটে দিয়ে বলি
এই জ্ঞান পাতাল থেকে তুলে এনেছি
আততায়ীর তির ছুটে এসেছে
গোলাগুলির শব্দ শুনেছি
আবার ধুলো ঝেড়ে
উঠে দাঁড়িয়েছি
আমার মাকে দেখেই
আমি প্রথম মরুভূমির জাহাজ
আবিষ্কার করেছি
মৃতদেহ
একটা ভিনগ্রহের নক্ষত্র
আমাকে শাসিয়ে গেল
তার ঔদাসিন্যে
চোখ থেকে
আগুন এবং রক্ত বেরিয়ে এল
পূর্বজন্মের কথা
স্মরণ করিয়ে বললাম
এই হল সেই পুকুর
এই হল সেই গাছ
এই হল সেই ভাঙা মন্দির
আর
এই হল
শেয়ালের গর্ত এবং গাছের কোটর
দুটো রঙিন ডানা মেলে
সে আকাশে উড়ে গেল
আজ তার
মৃতদেহের সামনে দাঁড়িয়ে আছি
একটা
হাত-পা ভাঙা নিথর দেহ শুয়ে আছে
তছনছ বাগান
একটি মর্কট
তীব্র এক লাফে
নদী পেরিয়ে গেল
একটি মূর্খ তরবারি
লিঙ্গের মতো খাড়া হয়ে দাঁড়িয়ে রইল
শুধুমাত্র কাল্পনিক শৌর্যবীর্যের উপর
মর্কটের গতিপথকে রামধনু আর
তরবারির বীর্যকে সত্য ভেবে
মানুষ জড়ো হলো একটি যুদ্ধক্ষেত্রে
তরবারি এবং বীর্য থেকে
অঝোরে ঝরে পড়ল বিষ
সেই বিষেই
মৃত্যু হলো বিশ্বাসের
তার
তিরবিদ্ধ আহত পাখিটির ছটফটানি থেকেই
জন্ম হলো অবিশ্বাসের
এই যে আহত তছনছ বাগান
তাদেরই তো সৃষ্টি!
বালক
শৈশবের এক বালককে খুঁজতে
একমুঠো মাটি তুলে নিয়ে
মাথায় গায়ে হাতে এবং পায়ে মাখলাম
মাখতে মাখতে
হঠাৎ বার্ধক্যে পৌঁছে গেলাম আবার
অথচ
খেয়ালই করিনি
কখন বালখিল্যতা পেরিয়ে গেছি
যেখানে
এক মৃত কিশোর পড়ে আছে
পৃথিবী
একটা অর্ধেক আকাশের নীচে
একটা গোটা পৃথিবী ঝুলে আছে
কত ধানখেত
কত গাছপালা
কত পাহাড়-পর্বত
কত নদীনালা
কত বাসস্টপ
এবং
কত রেলস্টেশন পেরিয়ে
তোমার কাছে এসেছি
তোমার শরীরের সব অক্ষরই
আমার সাজানো
এখন আমার
মৃত্যুকেই ভয়
এই হাওয়া
আর কোথায় পাব আমি?