তন্ময় ভট্টাচার্য
তীব্র
রক্ত ও রসের এই মেলামেশা কীভাবে দেখেছ
নিতম্বে চপেটাঘাত, লালাতন্তু আদানপ্রদান
আর্তনাদ, ধ্বনি-নিয়ন্ত্রণ
কীভাবে দেখেছ, আর, কীভাবে সফল হল সব
শেষাবধি দেখেছ কি, দানব-প্রাবল্যে মাথা ঠিক
থাকেনি, থেকেছে মুক্তি, শান্তিময়ী পথ—
তীব্র অভিজ্ঞতা-শেষে, নারীটি থেকেছ ভগবৎ
এঁড়েদা
তারপর, সব বাদ্য থেমে গেল। শ্মশানযাত্রীরা
কান্নার সুযোগ পেল, গায়ে বিঁধল খিলখিলে হাসি
ও নদীর শব্দ। থেকে-থেকে মশা ধরল খুব।
সন্তান আগুন ধরল। পূজারী, অগ্নির স্তুতি।
দৃশ্যের সমস্ত সন্ধ্যা আয়েশে ধরলেন মুক্তকেশী—
গোপন
যৌনতার আশা পেয়ে চুপিচুপি হাজির হয়েছে
হাওয়া লেগে টুংটাং অন্দরসজ্জাটি যেন তার
অনুকূলে কথা বলে, দেখে নিয়ো তেতলার ফ্ল্যাট
আরও দেখো, যেন কেউ না-দ্যাখে সহজে
আশা পেয়ে— চুপিচুপি— এত দ্বন্দ্ব পেরিয়ে কখনো
সম্মতি নাগালে আসে? রোদ-জল খাওয়ায় শরীরে?
কল্পনায় বেড়ে-বেড়ে তবু যা-যা পুরুষ্টু হয়েছে
সহন
পেটে মদ পড়ামাত্র জেগে ওঠে সততা আমার
তোমাকে বাহুল্য মনে হয়
জগৎ, সংযম, মিথ্যা—একে-একে সমস্ত দুয়ার
বন্ধ হয়ে আসে, আর, আমি সেই অদৃশ্য বয়ান
দুর্বল মুহূর্তে যা-যা ফাঁস হতে থাকে
যে-শ্রবণলিপি—তুমি, শান্ত, লুকিয়ে ফ্যালো
ছিপি বন্ধ করো তারপর
কথামৃত
তোমাকে জিজ্ঞাসা করে কোনো কথা ঠিক-ঠিক জানা কি সম্ভব
কথা খালি ঘুরে যায়, চড়া রোদে বাড়িতে ফেরে না
না-খেয়ে দুপুর কাটে প্রতিদিন ঢাকা দিয়ে রেখে
কথা গেলে আমাদের খিদে পাওয়া ছাড়া
কোনো কি গুজব আছে, স্নান আছে, চুক্তি হতে পারে?
খেতে বসে কথাবার্তা থেমে গেছে যে-ভবসংসারে
বিবাহপ্রস্তাব
আমার বাড়িতে আজ রীতিমতো সংসার বসেছে
ছোটাছুটি, ঠেলাঠেলি, গা এলিয়ে ফিলিমের গান—
সবই চলছে খোপে খোপে, কতদিন পর জড়ো হয়ে
সবাই আনন্দে মাতল, মনে পড়ল দেশ গাঁ-র ভাষা
আজ কে কোথায় থাকে, কোন ঘুপচি পাড়ার অন্দরে
আলো নেই, হাওয়া নেই, গাছে নেই পুরুষ্টু বাতাবি
তবু কী ভরন্ত দ্যাখো ভেবে ফেলছি আত্মীয়-সংসার
আমার বাড়িতে আজও কেউ নেই—তুমি আসতে পারো?
সরস্বতী
এত শান্ত হয়ে থাকো, ভয় হয়, ভেতরে-ভেতরে
কী যেন চক্রান্ত চলছে, মোক্ষম সময়ে বীণা থেকে
সুতীব্র ঝংকার উঠবে, আর আমি, অবশ পূজারী,
পায়ে সমর্পিত ফুল দিতে চাইব হাতে-হাতে, লিখে—