হৃদয় মালাকার
যারা কেউ আমায় বোঝেনি
তুমিও কেন যেন বুঝতে চাও না তুমি চলে যাওয়ার পর আমি তোমার দিকে তাকিয়ে থাকি। চোখের আড়াল হলেই দৌড়ে আবার দেখার চেষ্টা করি। দু'বাহুতে জড়িয়ে ধরতে চাই।
ছেলেবেলায় মামার চলে যাওয়ার সময় আমি পিছনে পিছনে দৌড়ে হাত টেনে ধরতাম। মামা আমাকে আর একটা চকলেটের দাম দিয়ে চলে যেত।
বাবা অফিসে যাবেন। গাড়িতে উঠতেই আমি দৌড়ে গেছি। বলতাম- আমিও যাব। তিনি মাকে ডেকে আমাকে মায়ের কাছে রেখে চলে যেতেন।
যেদিন মা সরিসৃপের মতো চলে যাচ্ছিল ঘরের কোনা বেয়ে। আমি অশ্রুপাত করতে করতে তাকে আটকানোর চেষ্টা করেছিলাম। আমি মাকে জড়িয়ে ধরে আমার একা হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা জানালাম। তিনি যেতে যেতে আমাকে ঈশ্বরের ভরসায় রেখে গেলেন।
এদের কেউ আমাকে বোঝেনি। না-বুঝুক। ভেবেছিলাম তুমি অন্তত বুঝবে। তুমিও ঘুঘুর মতো যেতে যেতে আমাকে রেখে গেলে দু-চারটে খড়কুটোর ভরসায়।
প্রেমকে বলি
প্রেমকে বলি কিছুটা সময় নীরব থাকো
একাকী বসে থাকো পাহাড়ি নীরবতায়।
আরো গাঢ় হোক মায়ার মেঘ
আরো বিশ্বস্ত হোক হাতের চেনাজানা।
তারপর বুকে আসো,
আসো পাজড়ের নিচে গভীর আলিঙ্গনে।
একতারা হাতে গান শোনাও দেহের যত গান
চোখে চোখে স্পর্শ করো দূরত্ব
মনে মনে স্পর্শ করো মমত্ব,
গান শোনাও শরীরের শিরা-উপশিরা বাজিয়ে।
প্রেমকে বলি সবাইকে ছুটি দিয়ে একঘরে হও
অঙ্কুরিত হও ধীরে ধীরে
নিজেরই ছায়ার নিচে চুপচাপ বসো
বিপন্ন কথাগুলো নিজের সাথে বলো।
এবার জানাজানি হোক
ফুল ফুটুক, সুবাসিত হোক
প্রলোভিত করো প্রজাপতি।
প্রেমকে বলি- না-হয় কিছুটা বদনামে ভিজে উঠুক রাত্রি।